ভাল মজুরি ও নিরাপদ জীবনের সন্ধানে ভিন রাজ্য মুখী সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা

ভাল মজুরি ও নিরাপদ জীবনের সন্ধানে ভিন রাজ্য মুখী সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা

সার্বভৌম সমাচার : সুন্দরবন ও সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকার জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরে নিজেদের জীবন-যাপন করে থাকে। কিন্তু একের পর এক বাঘের আক্রমণে এবং করোনা আবহে ঘরে বসে নিত্য হতাশার শিকার হয়ে ভিন রাজ্যমুখী হচ্ছেন সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা।

জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ, বাসন্তী, কাকদ্বীপ, কুলতলী, মৌসুনি, গোসাবা ও নামখানা আশেপাসের কয়েক হাজার জেলে নিরাপদ জীবন ও উন্নত মজুরির জন্য বর্তমানে কেরালা ও তামিলনাড়ুর সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বাঘের আক্রমণে ঘটনা এখন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি গোপাল বৈদ্য (৫৪) নামে এক মৎস্যজীবীকে দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার গোসাবার ঝিলা-জঙ্গলে একটি বাঘ শিকার করে।

জানা গিয়েছে, গোপাল বৈদ্য নামের ওই জেলে সাতজেলিয়া-ঠাকুরন্তলার বাসিন্দা। সে তার নৌকায় খেতে যাচ্ছিল, তখন একটি বাঘ লাফিয়ে তাকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়। তিনি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এমনকি গত সপ্তাহে কমপক্ষে চার জেলেকে বাঘের কবলে পড়তে হয়েছে।


আরও পড়ুন--

এই মুহুর্তে, ওই এলাকার প্রায় তিন লাখ মানুষ ট্রলার ও যান্ত্রিক নৌকায় সাহায্যে মাছ ধরার পেশার সাথে জড়িত। কিন্তু বাঘের ভয়ে কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া কয়েক হাজার জেলেরা করোনা মহামারীতে লকডাউনের প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি থেকে দেশে ফিরে আসার জন্য জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেন।

দক্ষিণবঙ্গ মাৎস্যজীবী ফোরামের এক সদস্য বলেন, “আমাদের কাছে জেলেদের এমন কোন সঠিক সংখ্যা নেই। তবে সংখ্যা প্রায় ১০,০০০ হবে। যারা এ রাজ্য থেকে কেরালা, তামিলনাড়ু, এমনকি ওড়িশায় গিয়ে এই একই পেশায় কাজ করছে।”

সুন্দরবনের জেলেরা সাধারণত সামুদ্রিক মাছ ধরার কাজ করার জন্য কেরালায় পাড়ি দেয়। তাদের দাবী, “বার বার বাঘের আক্রমণ আমাদের এখানে মাছ ধরা বন্ধ করতে বাধ্য করে”।

সুন্দরবনের অন্য এক মৎস্যজীবীর কথায়, আমার যান্ত্রিক নৌকোটি বিক্রি করে ফেব্রুয়ারিতে কেরালায় চলে গিয়েছিলাম। এখন আমি মাসে প্রায় ১৫,০০০ টাকা উপার্জন করি। কিন্তু কেরালাতে যাওয়ার আগে এর অর্ধেকও উপার্জন করতে পারিনি”।



আরও পড়ুন--

এছাড়াও জেলেদের দাবী, এক সময় পারশে, ভাঙ্গাল, বেকতি, টেংরা, খোরকুল, কাশকেল, ফোলি, চেলা এবং ডাটনি জাতীয় মাছগুলি একসময় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও এখন তা খুবই কম পাওয়া যায়।

সরকারী কলেজের এক প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের মৎস্য ও লিমনোলজি শিক্ষার বিশেষজ্ঞের মতে, “ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে সুন্দরবনের নদীগুলিতে জলের হাইপার-লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে। নদীগুলিতে দূষণও মাছের প্রজননকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ করেছে। এছাড়াও মাইক্রোহোল জাল ব্যবহারের ফলে বাচ্চা মাছ ধরা পড়েছে।"

হিংলগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, “আমরা জেলেদের জীবিকা নির্বাহের বিকল্প ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। অন্যথায়, ভবিষ্যতে এই ধরনের স্থানান্তর সমস্যা আরও প্রবল হয়ে উঠবে।”
 

আরও দেখুন--




Tags-  #Bongaon #Samachar #Bongaon Samachar #Samachar #Sarbabhauma Samachar #Sarba Bhauma Samacar #Bongaon News #Today News #Today Bongaon News #bongaon news today live, #bongaon bengali news, #bongaon khabar, #bongaon samachar, #samachar bongaon,

Post a Comment

Previous Post Next Post