এই মুহূর্তের বিশেষ খবর : লকডাউন করে থামিয়ে রাখা যাবে না করোনা ভাইরাস; মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক বলল 'WHO'


এই মুহূর্তের বিশেষ খবর : লকডাউন করে থামিয়ে রাখা যাবে না করোনা ভাইরাস; মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক বলল 'WHO'


সমাচার ওয়েব ডেস্ক ঃ  আজ ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সারা দেশে 'জনতা কার্ফু'জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাটের বেশ কিছু শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পণ্ডিচেরিতে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আজ থেকে সাড়ে চার দিনের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হতে চলেছে বাংলার প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। সোমবার অর্থাৎ ২৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার অর্থাৎ ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন বলবৎ থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং জরুরি পরিষেবার বাইরে থাকা যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

করোনা ভাইরাস রুখতে প্রথমে বন্ধ করা হয় বড় জমায়েত। এরপর ক্রমন্বয়ে স্কুল-কলেজ, অফিস, দোকানপাট সব কিছুই বন্ধ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ঘর থেকে বেরনোও। ইতিমধ্যে লকডাউন ঘোষণা হয়েছে ভারতসহ বিশ্বের ৩২টি দেশে। থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গণপরিবহন বন্ধ, জরুরি পরিষেবা বাদে সমস্তরকম পরিষেবা বন্ধ, ঘরের বাইরে বার হওয়া নিষেধ।

এই মুহূর্তের বিশেষ খবর : লকডাউন করে থামিয়ে রাখা যাবে না করোনা ভাইরাস; মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক বলল 'WHO'

ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) এমার্জেন্সি এক্সপার্ট মাইক রায়ান জানালেন, শুধুমাত্র লকডাউন জারি করে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা কি সত্যিই কার্যকরী। তার কথায় লকডাউন মন্দ নয়, তবে এটা খুব একটা কার্যকরীও নয়। তাঁর মতে, প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গেলে সবচেয়ে আগে দরকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা। কোনও মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা সেটা খুঁজে বার করে তাঁকে আগে আইসোলেশনে পাঠানো।

তারপর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা। হু-এর আধিকারিক মাইক রায়ান বুঝিয়ে বলেছেন, জনসাধারণের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে শুধু লকডাউনেই যে সমস্যা মিটবে না এটা আগে বুঝতে হবে। কারণ হিসেবে তাঁর মত, এমনও হতে পারে ভাইরাসের উপসর্গ কারওর মধ্যে ধরা পড়েনি (Asymptomatic)। লকডাউনের কারণে তিনি পরিবারের বাকিদের সঙ্গে একই বাড়িতে বন্দি রইলেন। পরে দেখা গেল সেই পরিবারের সকলের মধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। কাজেই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবচেয়ে জরুরি ল্যাব-টেস্ট এবং সংক্রামিতদের খুঁজে বার করে তড়িঘড়ি আইসোলেশে পাঠানো।

তা না হলে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে যখন ছন্দে ফিরতে শুরু করবে নিত্যদিনের জীবন, দেখা যাবে মানুষের মধ্যেই সুপ্ত হয়ে থাকা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। তখন পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হবে। সেই সংক্রমণ ফের মহামারী হয়ে ছড়িয়ে পড়বে সকলের মাঝে।

এই মুহূর্তের বিশেষ খবর : লকডাউন করে থামিয়ে রাখা যাবে না করোনা ভাইরাস; মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক বলল 'WHO'

মাইক রায়ানের মতে, সংক্রামিত রোগীকে যদি পাঁচজনের থেকে আলাদা না করা যায়, তাহলে তাঁর থেকেই সংক্রমণ ছড়াবে বাকিদের মধ্যে। তখন লকডাউন করে সব পরিষেবা বন্ধ করেও লাভ নেই। কারণ ভাইরাস ভেতরে ভেতরে তার দাপট দেখিয়ে যাবে। বিটা-করোনাভাইরাসের এই ভয়ঙ্কর ভাইরাল স্ট্রেন সার্স-সিওভি-২ কে বিশ্বজোড়া মহামারী ঘোষণা করেছে হু। এই ভাইরাসের সংক্রমণে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হন রোগী, যাকে বলা হয় সিওভিআইডি-১৯ (COVID 19) ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের থেকে মানুষে (Human to Human transmission) এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে দ্রুত হারে। মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক। ভারতে না হলেও বিশ্বের অনেক দেশেই Community Transmission শুরু হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়েই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশে লকডাউন ঘোষণা করতে হয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, রোগ পুষে রাখলেই লাগামছাড়া হবে। সতর্কতা দরকার শুরুতেই। উপসর্গ যতই সামান্য হোক 'টেস্ট' করালেই ধরা পড়বে ভাইরাস, চিকিত্‍সাও শুরু হবে তাড়াতাড়ি। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগেই তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলা যাবে। টেস্ট ছাড়া কোনওদিনই ধরা পড়বে না ভাইরাস। শুধুমাত্র সংক্রমণ সন্দেহ হলেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে ফেলে রাখার মানে নেই। সামান্য উপসর্গ দেখা গেলেও সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত, থুতু, লালা বা দেহরসের নমুনা ল্যাবোরেটরিতে টেস্ট করা দরকার। তাহলেই জানা যাবে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে কিনা এবং আক্রান্ত ঠিক কোন স্টেজে রয়েছেন।

চিকিত্‍সাও হবে ঠিক সেই মতোই। সংক্রমণ সারা শরীরে ছড়াবার আগেই তাকে কিছুটা হলেও রুখে দেওয়া যাবে। ঘেব্রেইসাসের মতকে সমর্থন করে একই কথা বললেন মাইক রায়ান। মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৩ হাজার। সংক্রামিত ৩ লক্ষ ১৭ হাজারের কাছাকাছি। চিনে এই ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ৩,২৬১ জনের। যদিও চিনে ভাইরাসের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে বলে দাবি করেছে সে দেশের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন।

এই মুহূর্তের বিশেষ খবর : লকডাউন করে থামিয়ে রাখা যাবে না করোনা ভাইরাস; মানুষই এখন এই ভাইরাসের বাহক বলল 'WHO'


 উল্টে চিনকে ছাপিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে ইতালিতে। ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চার হাজারের বেশি। শুক্রবার থেকে শনিবারের মধ্যে একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৭৯২ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনও নির্দেশিকা না মেনেই পারস্পরিক মেলামেশা জারি রেখেছিলেন ইতালির বাসিন্দারা।সেই কারণেই সংক্রমণ এত বিরাট আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতালির পরে স্পেন, ইরান, আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়াতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ভারত এখনও স্টেজ ২ বা দ্বিতীয় পর্যায়ে (সেখানে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়নি) থাকলেও সেখানে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছুঁয়েছে।

1 Comments

Previous Post Next Post