অম্লিতা দাস : "পরবর্তী স্টেশন যতীন দাস পার্ক"।কামরার ভেতরে শোনা গেল সেই একই ঘোষণা।যাত্রীরা বসে নিজ নিজ সিটে।ফিরে এলো সেই চেনা রূপ তবে সোশ্যাল ডিস্টেনসিং মেনে।
প্রায় ছয় মাস পর মেট্রোর চাকার শব্দে স্বস্তি ফিরল বহু অফিস যাত্রীর।২৪শে মার্চের পর ১৪ই সেপ্টেম্বর।আজ আবার শুরু হল মেট্রো।প্রথমদিন ভিড় কম এ ছাড়াও নতুন পদ্ধতি বুঝতেও খানিকটা সময় লাগছে যাত্রীদের।।‘‘রবিবার রাতে প্রায় ৬ হাজার ই-পাস ইস্যু করা হয়েছে।’’ বলে জানান মেট্রো আধিকারিকরা।নতুন নিয়ম আগে থেকেই ঘোষণা করাই ছিল।
স্টেশনে ঢুকতে গেলে আগে থেকে যাত্রীদের নিতে হবে ই-পাস। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই পরিষেবা চালু থাকবে। এই ১২ ঘণ্টাকে ভাগ করা হয়েছে ১ ঘণ্টার ১২টি স্লটে। সেই স্লট বুক করে আগে যাত্রীদের ই-পাস জোগাড় করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।মেট্রো শুরু হওয়ার ঠিক ১২ ঘন্টা আগে রবিবারে শুরু হয় রাজ্য সরকারের পরিবহণ বিভাগের ‘পথদিশা’ অ্যাপে ইপাস বুকিং।বোঝার সুবিধার জন্য ১২ টি স্লটের ই-পাস হয়েছে আলাদা আলাদা রঙে।প্রথমদিকে পাস বুক করতে সমস্যা দেখা দিলেও পরে কাজটি করতে অসুবিধা বিশেষ দেখা যায়নি।
স্টেশনে যাত্রীদের আসার অনেক আগে থেকেই পৌঁছে যান মেট্রো অধিকারিক,স্থানীয় পুলিশ এবং রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স ।তাঁরা যাত্রীদের ই-পাস দেখতে শুরু করেন এবং তাপমাত্রা মেপে স্টেশনে ঢুকতে দেন।তারপরেই স্মার্ট গেট দিয়ে গিয়ে স্মার্ট কার্ড ঠেকিয়ে স্টেশন চত্বরে প্রবেশ।এরপর বাধ্যতামূলক নিয়ম দেওয়ালে থাকা স্যানিটাইজারে হাত ধুয়ে নেওয়া।এইসবের মধ্যে দিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কিছু যাত্রী।তাদের মতে স্মার্ট কার্ড রিচার্জ ফোনে কেন দেখার সুবিধা পাবেননা তারা?স্টেশনে সবার ব্যবহার করা মেশিনে স্মার্ট কার্ডের রিচার্জ দেখা কতটা নিরাপদ এই কোভিড হালে।অনেকে জানান স্মার্ট কার্ড রিচার্জের পর ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কেটে নিলেও রিচার্জ কিছুই হয়নি।মেট্রো কর্মীরা অনলাইন প্রক্রিয়ায় গন্ডগোল বলে শান্ত করেন তাঁদের।কার্ড রিচার্জের সমস্যার ক্ষেত্রে যাত্রীদের দেওয়া হয়েছে ০৩৩-২২২৬-৪৮১৭ নম্বর।
সুবিধা-অসুবিধার মধ্যে দিয়েই ৭টা ৫৬ মিনিটে প্ল্যাটফর্মে হাজির হল কলকাতার ‘লাইফ লাইন’ মেট্রো।মূল রুটের পাশাপাশি এ দিন চালু হয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবাও।তবে ভিড় যথেষ্ট কম হওয়ায় মূল রুটের মত এখানে ই-পাসের ব্যবস্থা রাখতে হয়নি আজ।কোভিডে থমকে যাওয়া চাকাগুলো প্রায় ৬মাস পর প্রথম সোমবার সকাল ৮টায় আবার ঘুরতে শুরু করল।মেট্রো সম্পূর্ণ স্যানিটাইজ করা।সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই সাতজনের সিটে চারজনের বসার অনুমতি আছে।সিটে ক্রস চিহ্নগুলো না বসতে বলা জায়গা গুলোকে চিহ্নিত করছে।বেশ কিছু যাত্রীদের মুখে দেখা যাচ্ছে স্বস্তির ছাপ।পুরোনো পরিবেশ পেয়ে অনেকেই নিশ্চিন্ত।দমদম ছাড়িয়ে মেট্রো চলতে লাগলো বেলগাছিয়া,শ্যামবাজার, শোভাবাজার,মহাত্মা গান্ধী রোড।