“এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করার কাজটা করে দেখাবো”- শুভেন্দু

I-will-show-the-work-of-making-this-Chief-Minister-a-former-ChiefMinister-Subhendu


জয় চক্রবর্তী : সিএএ নিয়ে আরও জোরাল হলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা জাহাজ দপ্তরের কেন্দ্রীয় পতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ৷ এবারে ঘটা করেই সিএএ নিয়ে জনসভা হল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরে। এদিনের সভায় আমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক সহ আরও অনেককেই৷ অভিযোগ, সেই সভাতেই আমন্ত্রণ করা হয়নি খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতিকেই ! আর এরই সঙ্গে আরও একবার সামনে এল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

শনিবার দুপুরে সিএএ নিয়ে জনসভা হল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গাইঘাটা, ঠাকুরনগরে৷ আর এই জনসভার আয়োজনের মূল হোতা ছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় পতিমন্ত্রী শান্তনু বাবু৷ তবে এদিন নিশিথ প্রামানিক না এলেও হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ কয়েকজন বিধায়কসহ স্বয়ং জলপাইগুড়ির সাংসদ৷ অন্যদিকে এদিনের জনসভায় দেখা যায়নি বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামপদ দাসকেও৷ যদিও তিনি তাঁর ছাপাইয়ে বলেন, “আমন্ত্রণ পাইনি তাই যাইনি৷”

এখন প্রশ্ন, কেন সুকান্ত মজুমদার ও রামপদ দাসকে আমন্ত্রণ জানানো হলো না ? তবে এ বিষয়ে জনসভা শুরুর আগেই শান্তনু বাবু জানিয়েছিলেন, “যা বলার জনসভার মঞ্চ থেকে বলবো৷” কিন্তু এদিন জনসভার মঞ্চ থেকে শান্তনু বাবু  এদিন কোন প্রশ্নের কোন উত্তরই দেননি৷ উল্লেখ্য কিছুদিন আগে ঠাকুরনগরে সুকান্ত বাবু সভা করেছিলেন। সেখানেও যাননি, শান্তুনু বাবু ও তার দাদা তথা গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর৷

অন্যদিকে রাজনৈতিক কারবারিরা জানাচ্ছেন, “সাম্প্রতিক সময়ে সুকান্তবাবুর সঙ্গে বনগাঁর সাংসদের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে৷ এছাড়াও শান্তনু বাবুর কিছু দাবি দাওয়া রয়েছে৷ যা সুকান্ত বাবু মানতে চাননি৷তারই প্রভাব পড়েছে এদিনের জনসভার আয়োজনে ৷”

এদিনের জনসভায় শুভেন্দুবাবু কটাক্ষ করে বলেন, “সিএএ বিরোধী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”৷ তিনি উপস্থিত মতুয়া ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সাক্ষী রেখে বলেন, “সিএএ বিরোধী এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করার কাজটা করে দেখাবো৷ তার জন্য আপনারা আশীর্বাদ করুন৷”

এদিন সভা শুরুর আগেই মতুয়ারা ঠাকুর ঠাকুরবাড়ির মন্দিরে পুজো দিয়ে শুভেন্দুবাবুকে অব্যর্থনা জানিয়েছিলেন। এদিন শুভেন্দুবাবু জানান, “ঠাকুরবাড়ির এই পূর্ণভূমিতে দাঁড়িয়ে শপথ নিচ্ছি, মুখ্যমন্ত্রীকে আমি বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে হারিয়েছি৷এবার এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী আমি করবই৷ এরপর সিএএ নিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, “সিএএ কার্যকর হবেই৷ কেউ আটকাতে পারবে না৷ মমতা ব্যানার্জি ভালো করে কান খুলে শুনে নিন সিএএ কার্যকর করবোই৷” 

অন্যদিকে এদিন সিএএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর  করা মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন শান্তনুবাবু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যাদের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আছে, তারাই নাগরিক৷ তাহলে আপনি বলুন, পাসপোর্ট তৈরি করতে গেলে কেন আপনার ডিআইবি সবসময় একাত্তর সালের আগের জমির দলিল দেখতে চান৷ আপনি কি দুচোখে তুলসী পাতা লাগিয়ে বসে আছেন৷” এই বিষয়ে শান্তনু বাবু জানিয়েছেন “শীঘ্রই সিএএ কার্যকর হবে ৷ কোন মুখ্যমন্ত্রী, কোন নেতা আটকাতে পারবেনা৷”

সিএএ নিয়ে শুভেন্দু এবং শান্তনু বাবুর বক্তব্যের প্রসঙ্গে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বহু মানুষ পাসপোর্ট ভিসা করে বিদেশে কাজ করতে যান৷ তাহলে তারা কি করে পাসপোর্ট পান৷ আসলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষকে এবং মতুয়াদের ভাওতা দিতে শুভেন্দু অধিকারী এবং শান্তনু ঠাকুররা মিথ্যা রটাচ্ছেন৷ যাদের ভোটার কার্ড আছে যারা ভোট দেন তারাই নাগরিক৷”

Post a Comment

Previous Post Next Post