
এম এ হাকিম
উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাট চাষ করতে গিয়ে চাষিরা ব্যাপক সমস্যায় ও দুর্ভোগে পড়েছেন। চাষিদের অভিযোগ, কাঁটাতারের বেড়া থেকে দেড়শো মিটারের মধ্যে পাট চাষ করতে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। মহকুমার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনগাঁর সাবেক বিধায়ক ও জেলা পরিষদের মেন্টর গোপাল শেঠ জেলা শাসককে শুক্রবার চিঠি দিয়েছেন।
শুক্রবার গোপাল বাবু প্রতিবেদককে জানান,‘বনগাঁ, বাগদা ও গাইঘাটা সীমান্তে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় পাট চাষ করতে গিয়ে বিএসএফের বাধার মুখে পড়েছেন চাষিরা। বিএসএফের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার না করা হলে চাষিরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়বেন। এবং এরফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।
![]() |
সীমান্ত এলাকার কৃষক পরিবারের মানুষজন চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কাঁটাতারের বেড়ার এপারে যেমন তাঁদের জমি আছে তেমনিভাবে কাঁটাতারের ওপারেও প্রচুর চাষাবাদের জমি রয়েছে। কিন্তু কাঁটাতারের দেড়শো মিটারের মধ্যে কোনও চাষাবাদ না করতে পারলে তাতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হবে। বিষয়টি জেলা শাসক-সহ বিভিন্ন আধিকারিককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে এবং অবিলম্বে ওই সমস্যার সমাধানের আবেদন জানানো হয়েছে।’
বাগদার তৃণমূল নেতা এবং জেলা পরিষদের সদস্য পরিতোষ সাহা জানান, ‘কাঁটাতারের এপাশে এবং ওপাশে দেড়শো মিটারের মধ্যে কোনও চাষাবাদ করতে দিচ্ছে না বিএসএফ। বিশেষকরে এখন পাট চাষের মরসুম হওয়ায় চাষিরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন। হরিহরপুর, মুস্তাফাপুর, বয়রা প্রভৃতি এলাকার চাষিরা এব্যাপারে তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। যদি কাঁটাতারের ওপাশে বিএসএফ যেতে এভাবে বাধা দেয় তাহলে যেসব ফসল ইতিমধ্যেই লাগানো হয়েছে সেসব ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। কাঁটাতারের ওপাশে কয়েক হাজার বিঘা চাষের জমি রয়েছে চাষিদের। এখন ধান চাষ চলছে। ধানে জল দেওয়ার সময়। আর কিছুদিন পরেই ধান কাটার সময় চলে আসবে। এছাড়া পটল-সহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়েছে এসব জমিতে। সংশ্লিষ্ট এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানরাও বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠকে বসে সমস্যার সুরাহা করার চেষ্টা করলেও কোনও ফল হয়নি।’
এব্যাপারে বাগদা ব্লকের রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ রায় জানান, ‘বিএসএফের কর্মকর্তারা আজ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গেট বন্ধ থাকবে। কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে আমাদের পঞ্চায়েত এলাকার কমপক্ষে ৪০০ একর জমি আছে। এছাড়া ৭১ টা পরিবার কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে রয়েছে। এভাবে যদি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সাধারণ মানুষ জন ও চাষিদের সমস্যার অন্ত থাকবে না। একে করোনাভাইরাসে লকডাউনজনিত কারণে মানুষজন কাজ হারিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন, তার ওপর যদি চাষাবাদও বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ব্যাপক সঙ্কটে পড়বে সাধারণ মানুষ।’
বিষয়টি বাগদার বিডিওকে জানানো হয়েছে এবং পঞ্চায়েত সংলগ্ন সীমান্ত এলাকার সমস্ত তথ্য পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে বলেও রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গণেশ রায় মন্তব্য করেন।
আরও খবর পড়ুন-- ফুল বাজার বন্ধ রাখার দাবিতে ঠাকুরনগর ফুল বাজারে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ