সায়ন ঘোষ : সমস্ত জল্পনার অবসান কাটিয়ে রদ বদল করা হল পৌরপ্রশাসককে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত বনগাঁ পৌরসভায় প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যকে সরিয়ে প্রশাসক করা হলো গোপাল শেঠকে। মঙ্গলবার ইমেল মারফত নবান্ন থেকে সে খবর জানানো হয় গোপাল বাবুকে । বুধবার সকালেই প্রশাসক এর ভূমিকায় দায়িত্ব গ্রহন করেন তিনি।
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ২০১১ সাল থেকে বনগাঁ পৌরসভার দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৫ সালে বনগাঁয় পুরনির্বাচনের সময় ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিতে জয়লাভ করে তৃণমূল৷ ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান পদে নিকুক্ত হয়েছিলেন শঙ্কর আঢ্য। তারপর ২০১৯ এর মে মাসে শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে ১৩ জন কাউন্সিলর স্বজনপোষণের ও স্বৈরাচার অভিযোগ এনে অনাস্থা আনেন। কাউন্সিলর দের মূল অভিযোগ ছিল, পৌরসভার যেকোনো কাজ নিজের সিদ্ধান্তেই করতেন শংকর আঢ্য। কোনো ব্যাপারে কারোর মতামত নিতেন না তিনি। উচ্চ আদালত পর্যন্ত যায় এই অনাস্থা অভিযোগ।
সর্বশেষে আস্থাভোটে শঙ্কর আঢ্য জিতলেও কিছু বনগাঁ (উঃ) এর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস সহ কাউন্সিলর ক্ষোভে বিজেপি’তে যোগদান করেন। বনগাঁ পৌরসভায় 2020 সালের মে মাসে শংকর আঢ্যের চেয়ারম্যান পদ থেকে মেয়াদ শেষ হয়েছিল। তারপরেই প্রশাসকের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। বনগাঁয় উন্নয়নও হয়েছ একের পর এক। কিন্তু কোথায় যেন তাঁর বিরুদ্ধে একটা ক্ষোভ জমে ছিল মানুষের মনে। একাধিক সময় নিঃশব্দে প্রতিবাদ করেছেন একাধিক মানুষ এবং সেই খবরই পৌঁছে গেছিল তৃণমূল সুপ্রীমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সূত্রের খবর, বনগাঁ বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ভরাডুবির জন্য দলেরই একাংশ শংকর আঢ্যের ভাবমূর্তিকেই দায়ি করেছিলেন। তৃণমূলের এক অংশ তাঁকে প্রশাসনিক পদ থেকে সরানোর জন্য উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আবেদনও জানিয়ে ছিলেন । মঙ্গলবার সেই প্রক্রিয়াই বাস্তবায়িত হয়।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে গোপাল শেঠ উত্তর 24 পরগনার তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক পদ সামলাচ্ছেন। প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল বাবু জানান, “বনগাঁ পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে কাজ করার জন্য আমার কাছে একটি সরকারি চিঠি এসেছে। মঙ্গলবার রাজ্য পুরদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, বনগাঁর পৌর প্রশাসক পদে রদবদল করা হচ্ছে। দল যা বলবে আমি তাই করবো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করে যাব।”
প্রশাসক বদলের বিষয়ে শংকর আঢ্য জানান, “আমাকে কেন সরানো হল সেটা দলই বলতে পারবে। সাধারণ মানুষ জানে যে উন্নয়ন করেছি ।যদি বনগাঁ উত্তর বিধানসভায় হারার জন্য আমাকে সরানো হয়, তাহলে আমি মনে করব, এটা দলের সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এটা অন্যায় করা হয়েছে ,তবে কাজ করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে এবং অনেকেই আমার ব্যাবহারে দুঃখ পেয়েছেন তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”