দিল্লির গণহত্যার নায়কদের বিচার হবেই ওদের কোনও স্থান নেই : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


Delhi's genocidal heroes will have no place to be judged: Mamata Banerjee

সমাচার ওয়েব ডেস্ক : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দিল্লির গণহত্যার নায়কদের বিচার হবেই, এদেশে ওদের কোনও স্থান নেই। তিনি আজ বুধবার  দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুরে এক জনসমাবেশে বক্তব্য রাখার সময়ে ওই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘দিল্লির বুকে আপনারা দেখলেন নালার মধ্যে মৃতদেহ ভেসে উঠছে। প্রতিদিন মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। দিল্লি ওইটুকু একটা জায়গা কিন্তু সেখানে মৃতদেহের পাহাড় পাওয়া যাচ্ছে।’

মমতা বলেন, ‘কত লোক ঘর ছেড়ে চলে গেছে, হাজার হাজার মানুষ তাঁর পরিবার ছেড়ে তাঁর ঘর ছেড়ে প্রাণের আশঙ্কায় কোথায় চলে গেছে আমরা জানি না। আমি সাংবাদিক বন্ধুদের কাছে শুনেছি এখনও ৭০০ মানুষ নিখোঁজ আছেন। এখনও অনেক আছে যাদের ডেডবডি পাওয়া যায়নি। আবার অনেক ডেডবডি আছে যা শনাক্ত করা যায়নি। সেজন্য লোকে জানতে পারছে না। যেটা জানতে পেরেছেন ৫০ জনের বেশি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। যাদের পাওয়া যায়নি তাঁরা হিন্দু, না মুসলিম, না তাঁরা জনগণ না তাঁরা এদেশের নাগরিক? এর উত্তর বিজেপিকে দিতে হবে।’

তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ/ক্যা) জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) প্রসঙ্গে বলেন, ‘ক্যা-এনআরসি-এনপিআর’ একই বৃন্তে তিনটে কুসুম। একটার সাথে আরেকটা জড়িত।’

কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘তুমি আমার  কৈফিয়ত চাচ্ছো? আমি নাগরিক কি না তোমায় কৈফিয়ত দিতে হবে? আমি ভারতবর্ষকে ভালোবাসি কি না তোমায় কৈফিয়ত দিতে হবে? আমি ভারতবর্ষের নাগরিক কি না তোমায় বলতে হবে? যারা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করল, যারা মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করল, যারা এদেশকে খাইয়ে পরিয়ে বাঁচিয়ে রেখে দিয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের প্রশ্ন আমরা দেশে থাকতে পারব কি না?’

মমতা বিজেপি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘যদি এক না থাকেন তাহলে মনে রাখবেন ওঁরা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে তছনছ করে দেবে! এদের স্লোগান শুনতে পাচ্ছেন? কোনোদিন শুনেছেন ‘গুলি মারো’? ‘গুলি মারো’ একটা কী ভালো স্লোগান? বিজেপি’র মুখ দিয়ে ভালো কথা বেরোয় না। পচা কথা বেরোয়। খারাপ কথা বেরোয়। ওই পচা শামুকে পা দেবেন না। পচা শামুকে পা দিলে পা কাটবেই। এটা মাথায় রাখবেন।’

বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা আরও বলেন, ‘সবে সেদিন জন্মেছেন, জন্মেই কি না কৈফিয়ত চাচ্ছে! আগে নিজেরা কৈফিয়ত দিন এই দেশকে, এই দেশে ‘গণহত্যা’ করার অধিকার আপানাদের কে দিল? কে দিল ‘গণহত্যা’ করার অধিকার? বিচার মানুষ চাইবেই আজ না হয় কাল। বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদবে না। বিচার হবেই মনে রাখবেন।’

তিনি আগামী পরশুদিন থেকে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে দিল্লির সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের টার্গেট বেঁধে দিয়ে বলেন, ‘দিল্লির যে দাঙ্গা, সেটাকে দাঙ্গা নয় ‘গণহত্যা’ বলুন। ওটা দাঙ্গা দেখানো হয়েছে শেষে। বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে লোক মেরে দাঙ্গা করা হয়েছে। বলুন, দিল্লিতে গণহত্যা হল কেন জবাব চাই, জবাব দাও। আর ওই কর্মসূচির নাম হবে বিজেপি ছি-ছি! ‘গণহত্যা’র নায়ক বিজেপি ছি-ছি! ক্যা’র নায়ক বিজেপি ছি-ছি! এনআরসি’র নায়ক বিজেপি ছি-ছি! এনপিআরের নায়ক বিজেপি ছি-ছি! মানুষ মারার নায়ক বিজেপি ছি-ছি! সুতরাং এদেশে ওদের স্থান নেই। এজন্য জোট বাঁধুন, শক্তিশালী হোন। সমাজের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের কাছে আমাদের আবেদন এই লড়াইয়ে আপনাদের সবাইকে আমাদের পাশে চাই।’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এযাবৎ যেসব জনকল্যাণমূলক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে সেসবের সুফল সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post