প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে আপত্তিকর পোস্টের অভিযোগে অসমের বাঙালি অধ্যাপককে গ্রেফতার, নিন্দা

Assam Bengali professor arrested, condemned for targeting offensive post of PM

সমাচার ওয়েব ডেস্ক : দিল্লির সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে গ্রেফতার হলেন সৌরদীপ সেনগুপ্ত নামে অসমের এক বাঙালি অধ্যাপক। গতকাল শুক্রবার রাতে অসমের গুরুচরণ কলেজের পদার্থ্যবিদ্যা বিভাগের ওই অতিথি শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৌরদীপকে পুলিশ তাঁর শিলচরের ইটখোলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

এদিকে, ওই অধ্যাপককে গ্রেফতারের ঘটনায় আজ শনিবার বিভিন্নমহল থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনার কথা জেনে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি। শিলচরের যে অধ্যাপক তিনি কোনও অপরাধ করেননি, তিনি ফেসবুকে দিল্লির ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এটা তো যে কেউ করতে পারে। সংবিধানের ১৯ ধারা আমাদের এই বাক স্বাধীনতা দিয়েছে। যদি বাক স্বাধীনতা প্রয়োগ করলে তাঁর ওপরে হামলা করা হয় এবং তাঁকে শেষপর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় তাহলে আমি বলব এটা কোনও সভ্য শাসন চলছে না, কোনও সভ্য সরকার চলছে না। এটা কী হচ্ছে? এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।’

সিপিএম নেতা ও পলিটব্যুরোর সদস্য মুহাম্মাদ সেলিম বলেন, বিজেপি-আরএসএস যেটা করতে চাচ্ছে তা রেসিয়াল ডেমোক্রেসি।

কংগ্রেসের এমপি প্রদীপ ভট্টাচার্য অধ্যাপক গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।


প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করে আপত্তিকর পোস্টের অভিযোগে অসমের বাঙালি অধ্যাপককে গ্রেফতার, নিন্দা


অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য ওই গ্রেফতারের ঘটনাকে সমর্থন করে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।

অধ্যাপক সৌরদীপ সেনগুপ্ত ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘আমরা এক গণহত্যাকারীকে দু’বার নির্বাচিত করেছি।’ তাঁর ওই পোস্ট ভাইরাল হতেই বিজেপিশাসিত অসমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই পোস্টের জেরে কলেজে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় এবিভিপি’র সদস্য ও বিজেপি’র সমর্থকরা। বিক্ষোভ এড়াতে ওই কলেজেরই কিছু অধ্যাপকের কথায় তিনি পোস্টটি সরিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু গেরুয়া শিবির তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে তাঁর বাসায় চড়াও হয়ে ফেসবুক লাইভে ক্ষমা চাওয়ানোর চেষ্টা হয়। এরপরেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।

‘ভয়েস অব বরাক ভ্যালি’ নামে একটি ফেসবুক পেজের সদস্যরা সৌরদীপের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। ওই পোস্টের মাধ্যমে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি।

অধ্যাপক সৌরদীপ অবশ্যে ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘কোনও জাতিকে অপমান করার উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমার মন্তব্যের জেরে যদি কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ আহত হয়ে থাকেন, সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’ কিন্তু শুক্রবার রাতেই শিলচর সদর থানার পুলিশ অধ্যাপক সৌরদীপ সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করে।

Post a Comment

Previous Post Next Post