মুখ বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার, সম্পত্তি ঘটিত কারনে খুন বলে অনুমান পুলিশের

মুখ বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার, সম্পত্তি ঘটিত কারনে খুন বলে অনুমান পুলিশের

সার্বভৌম সমাচার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : ঘরের বিছানা লন্ডভন্ড । খোলা অবস্থায় পড়ে আছে গয়নার বাক্স । আর ঠিক তার পাশেই মুখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধার দেহ। দুটি ঘরে মোট ৫টি আলমারি। সবগুলিই ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে কাপড়, জামা, কাগজপত্র। উঠানে পড়ে রয়েছে সুটকেশ । বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েয়ছে ট্যাঙ্ক, সুটকেস। জানা গিয়েছে মৃত বৃদ্ধার নাম সুষমা চ্যাটারজি। বয়স ৮০ বছর।

সোমবার সকালে বারুইপুর থানার হরিহরপুর পঞ্চায়েতের পশ্ছিম শালেপুরের ওই ঘটনায় তদন্তে যান বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিত বসু সহ থানার আই সি, এসডিপিও। এছাড়াও ঘটনাস্থলে যান হরিহরপুর পঞ্চায়েতের প্রধানও। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এলাকায় ভিড় জমে যায় ঘটনার পর। তবে বৃদ্ধা কে কেন খুন করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একাধিক। লন্ডভন্ড হবার কি কি জিনিস খোয়া গেল তাও পুলিশ দেখছে। বেশ কিছু গয়না ও জমির দলিল খোয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান সম্পত্তিঘটিত কারণে খুন হতে পারেন ওই বৃদ্ধা। তবে এর পিছনে দুই বা তার বেশি লোকজন আছে বলেও মনে করছে পুলিশ।

পাশাপাশি কোন চেনাজানার মধ্যেই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিত বসু বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই আসল কারন জানা যাবে। তবে প্রাথমিক অনুমান, বৃদ্ধাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।



আরও পড়ুন--

বারুইপুর-কুলপি রোডের পাশেই বৃদ্ধার অ্যাসবেস্টাস ছাউনির পাকা বাড়ি। বৃদ্ধার স্বামী ডিফেন্সে কাজ করতেন। অনেক বছর আগেই মারা গিয়েছেন। এক ছেলে আর তার স্ত্রী ২০১৬ তে ক্যান্সারে মারা যায়। বৃদ্ধার বড় মেয়ে রাজলক্ষি দে কলকাতার বেলেঘাটায় থাকেন। ছোট মেয়ে বহ্নিশিখা নস্কর জুলপিয়াতে থাকে। বড় মেয়ের কাছেই ছেলের বড় মেয়ে থাকতো আর ছোট মেয়ে হায়দ্রবাদে থাকে।

এদিন সকাল ১০টা নাগাদ কাজের মাসি নুরজাহান বিবি কাজ করতে এসে দেখেন বাড়ির বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সুটকেশ পড়ে আছে। কোনটি খোলা কোনটি বন্ধ। গ্রিলের দরজাও খোলা। এতে সন্ধেহ হওয়ায় আশপাশের প্রতিবেশিদের ডাকেন তিনি। খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে দেখে খাটের উপর বৃদ্ধার দেহ পড়ে আছে। গোটা ঘর লন্ডভন্ড করা। বৃদ্ধা যে ঘরে থাকতেন সেই ঘরে দুটি আলমারি খোলা অবস্থায়। পাশের ঘরে আরও তিনটে আলমারিও খোলা। সুষমাদেবির পাশের ঘর থেকে তাঁর ঘরে যাওয়ার রাস্তা আসবাবপত্র দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনামাফিক।

পুলিশের মতে,এখান দিয়েই বৃদ্ধার ঘরে ঢোকে আততায়িরা। জানা যায়,মামনি বেগম বলে আরও এক পরিচারিকা বৃদ্ধার খাওয়ার দেখাশোনা করতো। সে কাল রাত ৮-৩০ টা পর্যন্ত বৃদ্ধার কাছেই ছিল তারপর বেরিয়ে যায়। পুলিশ জানায়,বাড়িটা মোট ৯কাঠা জমির উপর। তিন কাঠা ছিল বৃদ্ধার। বাকি ৬ কাঠা বড় মেয়ের। ছোট মেয়ের কাছেই বৃদ্ধার পেনশনের বই থাকতো। সেই সব তুলে দিতো। স্থানীয়রা জানায়, বড় মেয়ে লকডাউনের আগে প্রমোটার নিয়ে এসেছিল। সেই সময় মায়ের সাথে বিবাদ হয়েছিল। পুলিশ বলছে শুধু লুঠপাঠের জন্য খুন নয়। সোনা বেশি খোয়া যায়নি। বৃদ্ধার কানে সোনার দুল বালা ছিল। লুঠপাঠ হলে সেগুলো খোয়া যেত। 

আরও দেখুন--

Post a Comment

Previous Post Next Post